কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে , যা অনেক সেক্টরে বিপ্লব ঘটিয়েছে। একদিকে, কিছু খাতে চাকরির সংখ্যা কমে গেলেও, অন্যদিকে নতুন এআইয়ের কারণে চাকরির সম্ভাবনা: খাতগুলোতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করেছে। এআই অটোমেশনের পাশাপাশি নতুন কর্মক্ষেত্রের উদ্ভাবন করছে, যা কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। আসুন দেখে নেই, এআই-এর কারণে তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, স্বাস্থ্যসেবা খাত, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, উৎপাদন খাত, মিডিয়া এবং বিনোদন, ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতে চাকরির সম্ভাবনা বাড়ছে এবং কীভাবে এগুলো আমাদের কর্মজীবনকে প্রভাবিত করছে।
১. তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
এআই প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে আইটি সেক্টরে চাকরির সুযোগ বাড়ছে। বিশেষ করে, মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার, ডেটা সায়েন্টিস্ট, ক্লাউড কম্পিউটিং বিশেষজ্ঞ এবং এআই মডেল প্রশিক্ষকদের চাহিদা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এই পেশাগুলো এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং এআই-চালিত ভবিষ্যতের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
উদাহরণ
- মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার: এআই মডেল এবং অ্যালগরিদম তৈরিতে কাজ করে, যা ব্যবসা এবং প্রযুক্তি খাতে অত্যন্ত মূল্যবান।
- ডেটা সায়েন্টিস্ট: ডেটা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে, যা এআই মডেলের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে
- ক্লাউড কম্পিউটিং বিশেষজ্ঞ: এআই পরিকাঠামো পরিচালনা এবং ক্লাউড প্রযুক্তি পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করা।
২. স্বাস্থ্যসেবা খাত
স্বাস্থ্যসেবায় এআই প্রযুক্তির ব্যবহার প্রচুর সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এআই মেডিকেল ডিভাইস ডেভেলপার, ডিজিটাল হেলথ কোচ, এবং এআই মেডিকেল রিসার্চার হিসেবে কাজ করার সুযোগ বেড়েছে। এআই রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে উচ্চ দক্ষতা নিয়ে এসেছে, যা ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যসেবার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে।
- এআই মেডিকেল ডিভাইস ডেভেলপার: বিভিন্ন চিকিৎসা যন্ত্রপাতি উন্নত করতে এবং রোগ নির্ণয়ে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন।
- ডিজিটাল হেলথ কোচ: এআই ব্যবহার করে রোগীর স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখেন এবং তাদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা করেন।
৩. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
এআই শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছে, যা এডুটেক ডেভেলপার, ভার্চ্যুয়াল টিচার, এবং লার্নিং অ্যানালিস্ট পেশাগুলোর চাহিদা বাড়াচ্ছে। কাস্টমাইজড লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে। ফলে শিক্ষা খাতে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।
- এডুটেক ডেভেলপার: শিক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহারে সহায়ক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার গুণগত মান বাড়ায়।
- লার্নিং অ্যানালিস্ট: শিক্ষার্থীদের শেখার ধরন বিশ্লেষণ করে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করেন।
৪. উৎপাদন খাত
উৎপাদনশিল্পে এআই রোবট এবং স্বয়ংক্রিয়করণ ব্যবস্থার সাহায্যে কর্মসংস্থান বাড়ছে। রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ার, প্রেডিক্টিভ মেনটেইন্যান্স বিশেষজ্ঞ, এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল অ্যানালিস্টদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
- রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ার: রোবটের সাহায্যে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হয়।
- কোয়ালিটি কন্ট্রোল অ্যানালিস্ট: এআই ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান যাচাই করেন।
৫. মিডিয়া এবং বিনোদন খাত
মিডিয়া ও বিনোদন খাতে ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস আর্টিস্ট (VFX), এআই কনটেন্ট ক্রিয়েটর, এবং গেম ডেভেলপার পেশাগুলোর চাহিদা বেড়েছে। এই খাতে এআইয়ের সাহায্যে কনটেন্ট তৈরি, অ্যানিমেশন, এবং গেম ডিজাইন করে শিল্পকে নতুন মাত্রায় পৌঁছে দিচ্ছে।
- ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস আর্টিস্ট (VFX): এআই ব্যবহার করে বাস্তবসম্মত ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট তৈরি করা হয়।
৬. ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাত
ব্যাংকিং এবং ফিনটেক খাতে ফিনটেক ডেভেলপার, এআই রিস্ক ম্যানেজার, এবং গ্রাহকসেবা বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বেড়েছে। এআই বটস এবং অটোমেটেড ডেটা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকসেবা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
- ফিনটেক ডেভেলপার: এআই–ভিত্তিক আর্থিক পরিষেবার অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেন, যা গ্রাহকদের জন্য উন্নত সেবা প্রদান করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নতি বিশ্বজুড়ে কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার খুলে দিচ্ছে। প্রযুক্তির এই দ্রুত পরিবর্তন আমাদের জীবনকে আরও সহজ এবং উন্নত করার পাশাপাশি নতুন পেশার উদ্ভাবন করছে। তাই, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন দক্ষতা অর্জন ও এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বুঝে নেওয়া কর্মজীবনে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ | World Vision Bangladesh Job Circular 2024
Pingback: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বাছাই পরীক্ষা ২৬ অক্টোবর |